রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

সোনার তরি


গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা।
রাশি রাশি ভারা ভারা ধান কাটা হল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা খরপরশা ---
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা ।।


একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা ---
চারি দিকে বাকা জল করিছে খেলা ।
পরপারে দেখি আকা তরুছায়ামসী-মাখা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা প্রভাতবেলা ।
এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা ।।


গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে !
দেখে যেন মনে হয়, চিনি উহারে ।
ভরা পালে চলে যায়, কোনো দিকে নাহি চায়,
ঢেউগুলি নিরুপায় ভাঙ্গে দু ধারে ---
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে ।।


ওগো, তুমি কোথা যাও কোন বিদেশে ?
বারেক ভিরাও তরী কূলেতে এসে ।
যেয়ো যেথা যেতে চাও, যারে খুশি তারে দাও ---
শুধু তুমি নিয়ে যাও ক্ষণিক হেসে
আমার সোনার ধান কূলেতে এসে ।।


যত চাও তত লও তরণী-' পরে
আর আছে ? ---- আর নাই, দিয়েছি ভরে ।
এতকাল নদীকূলে যাহা লয়ে ছিনু ভুলে
সকলই দিলাম তুলে থরে বিথরে ---
এখন আমারে লহ করুণা ক'রে ।।


ঠাই নাই, ঠাই নাই, ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি ।
শ্রাবণগগন ঘিরে ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূণ্য নদীর তীরে রহিনু পড়ি ---

যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী ।

৫টি মন্তব্য: